স্টাফ রিপোর্ট:
মোঃ কামরুজ্জামান পেশায় একজন ইজিবাইক চালক। বাসা গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার ০২ নং সোনারায় ইউপির ফতেখাঁ ছাইতান তলা গ্রামে। কামরুজ্জামান এর বাবা ইয়াকুব আলী একজন অসুস্থ মানুষ। কামরুজ্জামান এর ইজি বাইক চালিয়ে যে আয় করে তা দিয়ে কোনমতে চলে তার পরিবার। এই ইজি বাইক কামরুজ্জামান এনজিও থেকে লোন নিয়ে ক্রয় করে। কামরুজ্জামান নিজেও বিবাহিত।
কামরুজ্জামান তার এলাকায় প্রতিদিন স্থানীয় বাজার এলাকায় ইজি বাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। সে ইজি বাইক নিয়ে ভাড়া ধরার আশায় গত ০২/০৬/২০২১ খ্রি. তারিখ সকাল ০৯.০০ টায় বামনডাঙ্গা বাজারে আসে। সেখানে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি (চোর) সহজ সরল কামরুজ্জামানকে অটো ভাড়া করে রংপুরে যাওয়া আসার চুক্তি করে। কামরুজ্জামান ৮০০/- টাকা ভাড়ায় চুক্তি করে সেই ব্যক্তি (চোর) কে নিয়ে রংপুর বাস টার্মিনালে আসে। সেই ব্যক্তি (চোর) কৌশলে কামরুজ্জামানকে ভাত খাওয়ানোর কথা বলে রাধুনী হোটেলে নিয়ে যায়। আর এদিকে সেই ব্যক্তির (চোর) সহযোগী চোর সহজ সরল কামরুজ্জামানের লোন নিয়ে কেনা ইজিবাইকটি চুরি করে নিয়ে চলে যায়। সেই ব্যক্তিটিও (চোর) কামরুজ্জামানকে হোটেলে বসিয়ে ফোনে কথা বলার নাম করে হোটেলের বাইরে চম্পট দেয়। সহজ সরল কামরুজ্জামান কিছুক্ষণ পর সেই লোকটি (চোর) আর ফিরে না আসলে হোটেলের বাইরে দেখে যে, সেই লোকটি (চোর) নেই এবং তার ইজি বাইকটিও যেখানে রেখেছিল সেখানে নেই। কামরুজ্জামান তখন কি আর করে। কান্নাকাটি করে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করে খুঁজতে খুঁজতে একসময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তারপর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সে তার নিজ বাসায় ফিরে যেতে সক্ষম হয়। অভাবগ্রস্ত ছেলেটি নিজের পরিবার, তার অসুস্থ বাবা, বয়স্ক মাকে নিয়ে হয়ে পড়ে নিরুপায়। তারপর একদিন হঠাৎ লোকমুখে কামরুজ্জামান জানতে পারে যে, রংপুর মেট্রোর ডিবি পুলিশ কয়েকটি চোরাই অটোবাইক উদ্ধার করেছে। এ কথা শুনে সে ছুটে চলে আসে রংপুর মেট্রো ডিবি অফিসে। এসে কান্না জর্জরিত কন্ঠে ডিবি অফিসের সিনিয়র অফিসারদের কাছে বলে তার ইজি বাইক হারানোর মর্মান্তিক ঘটনা।
এ ঘটনা শুনামাত্রই রংপুর মেট্রো ডিবির সুযোগ্য উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান মহোদয় রংপুর মেট্রো কোতয়ালী থানায় মামলা নিয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জনাব মোঃ ফারুক আহমেদকে নির্দেশ দেন যত দ্রুত সম্ভব কামরুজ্জামানের চোরাই অটো উদ্ধার কাজে নেমে পড়তে। তারপর সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মহোদয় কামরুজ্জামান এর পুরো ঘটনা শুনে বিশ্লেষনপূর্বক তাঁর নেতৃত্বে ডিবির একটি চৌকস দল নিয়ে নেমে পড়েন অভিযানে।
অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে নির্ঘুম রাতভর কষ্ট করে পরদিন অর্থাৎ গত ১০/০৬/২০২১ খ্রি. তারিখে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জনাব মোঃ ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে এসআই (নিঃ) তছলিম উদ্দিন আহমেদ, এসআই (নিঃ) বাবুল ইসলাম এবং অন্যান্য অফিসার ও ফোর্সসহ একটি চৌকস দল নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার মাগুরা ইউপির পাটোয়ারী পাড়া মোঃ নাজমুল ইসলাম রাজুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে কামরুজ্জামানের সেই চোরাই যাওয়া ইজিবাইক। সেই ইজিবাইক উদ্ধারপূর্বক চোরাই চক্রের মোট ০৭ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে চোরাই যাওয়া সেই ইজিবাইক ফিরিয়ে দেওয়া হয় কামরুজ্জামানের হাতে। কামরুজ্জামান তার হারিয়ে যাওয়া ইজিবাইক যে আবার ফিরে পাবে তার এই বিশ্বাসই ছিল না। তারপর যখন তার হাতে ইজি বাইকটি তুলে দেওয়া হয় তখন লক্ষ করা হয় তার চোখের কোণে আনন্দের অশ্রূ। তার এই আনন্দের কারণ হতে পেরে রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশ গর্বিত। কামরুজ্জামান কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রতি।
রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশ এভাবেই সেবা করে যেতে চায় অসহায় ও বিপদগ্রস্ত মানুষের। রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশ অসহায় ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে ন্যায়সঙ্গত সেবা প্রদানে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম মহোদয়ের দৃঢ় ও অবিচল প্রতিশ্রূতি বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর।
সকলে সচেতন হোন, সতর্ক হোন, তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করুন। বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় আছে আপনাদের পাশে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) ফারুক আহমেদ এর এফবি টাইমলাইন থেকে